স্টাফ রিপোর্টার ::
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাটে আসা ১২ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিক সনদ ও তিনজনকে জন্মসনদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের গুটিলা গ্রামের তোতা মিয়ার বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃত সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে।
আটককৃত রোহিঙ্গাদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন- মিয়ানমারের আকিদাবাদ জেলার মংদু থানার কুয়ান শিবং গ্রামের সাকির আহমদের ছেলে আবদুস সবুর (৫১), স্ত্রী আমিনা বেগম (৪২), ছেলে আবদুল হালিম (২৩), মেয়ে তালিহা আক্তার (১৫), মেয়ে হারিসা আক্তার (১৩), মেয়ে হালিমাতুস সাহিয়া (১১), মেয়ে সাবিহা আক্তার (৯), ছেলে আসলম শাহ (৭), মেয়ে উম্মা বেগম (২), আবদুল হালিমের স্ত্রী উম্মুল খাইরিন (২২) ও মেয়ে মোশারফা (১), হালিমের শ্যালক কাউছার (৭) প্রমুখ।
বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তপন কুমার দাস জানান, প্রায় ৩ মাস পূর্বে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের গুটিলা গ্রামের তোতা মিয়ার পুত্র আল আমিনের বসত বাড়িতে এই রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছিল। পুলিশ তাদের হাজির হওয়ার জন্য খবর দিলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা স্বেচ্ছায় নাগরিকত্ব সনদসহ পুলিশ ক্যাম্পে হাজির হয়। তখন তাদের আটক করা হয়। তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাঁচটি নাগরিক সনদ ও তিনটি জন্মসনদ নিয়েছেন। এসব জন্মসনদ জব্দ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গুটিলা গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে আল আমিন চট্টগ্রামের হাটহাজারিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। তার সাথে ওই রোহিঙ্গা পরিবারের মোহাম্মদ ও আহম্মদের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে রোহিঙ্গা পরিবারকে সে নিজ গ্রামে নিয়ে আসে এবং নাগরিকত্ব ও জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করে দেয়। এরপর আল আমিন ওই রোহিঙ্গা পরিবারের দুই সদস্যকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রাম ফিরে যায়। গত তিন মাস ধরে ওই রোহিঙ্গা পরিবারের সদস্যরা তাহিরপুরের বিভিন্ন গ্রামে আত্মগোপন করে ছিলেন। সম্প্রতি তারা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা এবং গুটিলা গ্রামে বসত-বাড়ি নির্মাণ করেন।
নাগরিক সনদ ও জন্মসনদ দেওয়ার ব্যাপারে বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, আমরা আগে জানতাম না উনারা রোহিঙ্গা। তোতা মিয়ার বাড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানকার ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন তাদের কাগজপত্র ঠিকঠাক করে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি তাতে স্বাক্ষর করি। এখানে আমার তো কোনো দোষ নেই।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান বলেন, আটককৃত রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হবে। নাগরিকত্ব ও জন্ম সনদ প্রদানের বিষয়ে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রযোজনীয় আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে চলে এসেছে। তাদের সবাইকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালীর বনভূমিতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এসব রোহিঙ্গা যাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়তে না পারে, তার জন্য সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সরকার।
খবর বিভাগঃ
Nationwide
tahirpur
0 Comments: