সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

জামালগঞ্জে কমিউনিটি পুলিশিং এর মতবিনিময়

জামালগঞ্জে কমিউনিটি পুলিশিং এর মতবিনিময়

সেলিম আহম্মেদ স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ” এই শ্লোগান কে সামনে রেখে জামালগঞ্জ থানা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট রেঞ্চ’র উপমহা পুলিশ পরিদর্শক মো: নজরুল ইসলাম বলেন, জনগনের সেবার মহান ব্রত নিয়েই পুলিশ বাহিনী দেশের আইনশৃঙ্খলার কাজ করে যাচ্ছে। পোশাক ধারী ব্যাক্তি যদি কারো কাছে হাত পাতে, তার প্রতি জনগনের সম্মান বোধ থাকেনা। পুলিশকে সহায়তার করার জন্যই জনগনকে সম্পৃক্ত করে কমিউনিটি পুলিশিং চালু করা হয়েছে। তিনি সুনামগঞ্জের নৌ-পথে চাঁদাবাজির বিষয়ে বলে গত বছর চাঁদাবাজির ব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পরই সরেজমিন এসে এর ব্যবস্থা নিয়েছি। এখনো যদি চাঁদাবাজি হয় শক্ত হাতে দমন করা হবে। জামালগঞ্জকে মাদক মুক্ত উপজেলা গড়তে হবে। তিনি আরো বলেন, যুব-ছাত্র সমাজকে মাদকাসক্ত থেকে বিরত রাখতে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। স্ব-স্ব ধর্মে অনুপ্রানিত থাকলে অপরাধ কর্ম কমে যাবে দেশে আরো সুষ্ঠ ও শান্তি পূর্ণভাবে পরিচালিত হবে, সমৃদ্ধির পথে আমরা আরো এগিয়ে যাবো। উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি করুনা সিন্ধু তালুকদারের সভাপতিত্বে ও জামালগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মিজানুর রহমান সিদ্দিকী এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ মো: আবুল হাশেম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো: বরকত উল্লাহ্ খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন দাস, তাহিরপুর সার্কেল অফিসার কানন কুমার দেবনাথ, জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজা আক্তার দিপু, উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তি যোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদ, সুনামগঞ্জ জেলা আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাচনাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব রেজাউল করিম শামীম, উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: রজব আলী, সুনামগঞ্জ জেলা কৃষকলীগের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এড.আসাদ উল্লাহ সরকার। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন, ব্যবসায়ী পঙ্কজ পাল চৌধুরী, সাংবাদিক ফোরাম সভাপতি ওয়ালী উল্লাহ সরকার, যুগান্তর প্রতিনিধি ও ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান, আ’লীগ নেতা জামিল আহম্মেদ জুয়েল, সুবোধ তালুকদার, সাবেক ইউপি সদস্য করিব আহম্মদ ও কামরুজ্জামান মন্টু মিয়া, কাশেম আখঞ্জি, ছাত্র জমিয়ত নেতা মো: আলতাফুর রহমান, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। 
ধর্মপাশায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওএমএসের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

ধর্মপাশায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওএমএসের চাল আত্মসাতের অভিযোগ

সেলিম আহম্মেদ স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে ওএমএসের তিনজন ডিলারের নামে বরাদ্দকৃত ৬ মেট্রিক টন চাল তাদেরকে না জানিয়ে তা তিনি নিজেই উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত অকাল বন্যায় উপজেলার কৃষকের একমাত্র বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার পর সরকারিভাবে কৃষকদের জন্য ১৫ টাকা কেজি দরে খোলা বাজারে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই লক্ষে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১১ জন ওএমএসের ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়। আর প্রত্যেক ডিলার প্রতিদিন ১৫ টাকা কেজি দরে খোলা বাজারে ৫ কেজি করে ২ শত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষদের মধ্যে চাল বিক্রি করে আসছে। কিন্তু খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা (ধর্মপাশা উপজেলা উপ-খাদ্য পরিদর্শক) গোলাম কিবরিয়া উপজেলার মধ্যনগর সদর ইউপি’র ডিলার শাখাওয়াত হোসেন, দক্ষিণ বংশিকুন্ডা ইউপির ডিলার রাজু আহম্মেদ ও বংশিকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের ওএমএসে ডিলার আব্দুর রাজ্জাক ওই তিন ডিলারের নামে চলতি মাসের ১৪-১৫ তারিখে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খোলা বাজারে বিক্রির জন্য বরাদ্দকৃত ৬ মেট্রিক টন চাল ওই তিন ডিলারকে না জানিয়েই তিনি চলতি মাসের ১৩ তারিখে তাদের নামে ব্যাংকে চালান জমা দিয়ে তিনি বরাদ্দকৃত ৬ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করে তা নিজেই আত্মসাত করেন।
গতকাল সোমবার সাড়ে ১১টায় এ বিষয়ে ধর্মপাশা সোণালী ব্যাংকে গিয়ে জানা যায়,খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা চলতি মাসের ১৩ তারিখে তিনি ওএমএস ডিলার আব্দুর রাজ্জাক, রাজু আহম্মেদ ও ডিলার শাখাওয়াত হোসেনের নামে ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর চালান মূলে ওই তিন ডিলারের নামে বরাদ্দকৃত ৬ মেট্রিক টন চাল উত্তোলণের জন্য  ৮১ হাজার টাকা তিনি জমা দেন।
এদিকে ওই তিন ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা চলতি মাসের ১৪-১৫ তারিখে খোলা বাজারে চাল কিনতে না পারায় তাদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়াতেই তার এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস পায়না। তিনি এলাকার কালোবাজারিদের সাথেও সখ্য গড়ে তুলেছেন বলেও একাধিক সূত্রে জানা যায়। এমনকি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম ও দূর্নীতির কারনে একাধিকবার আর্থিক জরিমানাও গুণতে হয়েছে তাকে।
উপজেলার বংশিকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ওএমএস ডিলার রাজু আহম্মেদ স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, চলতি মাসের ১৪-১৫ তারিখের জন্য আমার নামে বরাদ্দকৃত ২ মেট্রিক টন চালের টাকা ১৩ তারিখে ব্যাংকে জমা না দেয়ার জন্য খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা আমাকে জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি নিজেই আবার ১৩ তারিখে আমার নামে বরাদ্দকৃত চালের টাকা আমার অগোচরে ব্যাংকে জমা দিয়ে উক্ত চাল উত্তোলণ করে নিয়েছেন। আর এ জন্য দুইদিন খোলাবাজারে চাল বিক্রি করতে না পারায় এলাকার ভূক্তভোগীদের চাপ সামলাতে হচ্ছে আমাকে। একই ধরনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপজেলার মধ্যনগর ইউপির ডিলার শাখাওয়াত হোসেন ও বংশিকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের ডিলার আব্দুর রাজ্জাক।
উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া তার বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ৩ জন ডিলারের নামে ১৪-১৫ তারিখে খোলাবাজারে বিক্রির জন্য বরাদ্দকৃত ৬ মেট্রিক টন চালের টাকা ধর্মপাশা সোণালী ব্যাংকে জমা দিয়েছি এবং উক্ত চাল আমার গুদামেই রয়েছে। তবে পরিবহনের সমস্যার কারণে ডিলাররা ওই চাল নিতে পারেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাঈমা খন্দকার জানান, বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা  নেয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো.জাকারিয়া মোস্তফার কাছে  মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার পর তদন্তে প্রমাণিত হলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।